বাংলা গদ্যের নির্মাণ কৌশলের ক্ষেত্রে মীর মশাররফ হোসেন একজন অগ্রগামী পথিক। এই মহান কথাসাহিত্যিকের পদচারণায় বাংলা সাহিত্য যেমন ধন্য হয়েছে তেমনি বাংলা ভাষাও স্বমহিমায় দীপ্তিমান হয়েছে। কারবালার যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত বিষাদ সিন্ধু তার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস।
তিনি সেই সময়কার মুসলিম জাতির কণ্ঠস্বর হয়ে পূর্ব বাংলার নিপীড়িত সাধারণ মানুষের একজন প্রতিনিধি হিসাবে সাহিত্য জগতে স্থান করে নেয়ার স্পর্ধা দেখিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইংরেজ ও জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে আছে ‘জমিদার দর্পন’ নাটক। আবার হিন্দু -মুসলমানের বিভেদ সমাধানে তিনি রচনা করেছেন ‘গো জীবন’। তৎকালীন সময়ে মুসলমানদের বাংলা শিক্ষায় অনীহা, নারীর পরাধীনতা, সমাজের নানান কুসংস্কার, হিন্দু-মুসলিম বিভেদ, সমাজের বৈষম্য-অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে তার লেখনি হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের ভাষা।
কবি নজরুলের জন্মের অর্ধশত বছর পূর্বে মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম। চারদিকে যত সাহিত্যিক সবাই হিন্দু। সেই কঠিন পরিবেশে বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে গিয়ে তাকে নির্ভীক ভাবে অগ্রসর হতে হয়েছে। তার অসামান্য লেখক প্রতিভা ও কালজয়ী রচনার মধ্য দিয়ে তিনি যুগ-যুগান্তর বেঁচে থাকবেন বাংলা সাহিত্যে।
আজ এই অমর কথাশিল্পীর ১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী! জন্মদিনে ‘মীর মশাররফ হোসেন কালচারাল একাডেমি’ এর পক্ষ থেকে তাকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0মন্তব্যসমূহ