বৈষম্যের স্বাধীনতা চাই না

লিপির আলো
By -
0
বৈষম্যের স্বাধীনতা চাই না


বৈষম্যের স্বাধীনতা চাই না  

মুহাম্মদ বাবলু 



আমি আওয়ামীলীগ বুঝি না

বিএনপি বুঝি না

খিদে বুঝি!

আমার কাছে স্বাধীনতা মানে একবেলা পেট পুরে খাওয়া, 

রেল লাইনে কুড়িয়ে পাওয়া বিড়ির টানে তৃপ্তির ঢেকুর গিলে 

বস্তা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে যাওয়া। 


কত রাজা আসে যায় 

কত চুরি গেল টাকা, 

তিনবেলা ভিক্ষা চেয়েও 

আমাদের উদর থাকে ফাঁকা।


ক্ষুধার চেয়ে বড় সন্ত্রাস নেই 

৫০০ টাকার জন্য আমি হাত বোমা মারতে পারি

তোমরা যা ভাবো, আমি তা ভাবি না।

কারণ আমি টুকাই,ভিক্ষুক, পথশিশু 

আর মরার পরে বেওয়ারিশ লাশ!


যদি নাগরিকই না হলাম দেশের 

তবে কেমন বাংলাদেশ চাইবো বলো! 


তুমি শেখ হাসিনা, তুমি বিটিভি 

তুমি দেখালে ভিক্ষুক মুক্ত বাংলাদেশ! 

তাহলে রাস্তায়, বাসে, লঞ্চে, রেলস্টেশনে 

যারা হাহাকার ছেড়ে ভিক্ষা চায় 

তারা কারা?  


তুমি এরশাদ, তুমি জিয়া

তুমি খালেদা, তুমি হাসিনা 

তোমরা আমার জন্য কি করেছো?  

মেট্রোরেল! মেট্রোরেলে তো আমি চড়ি না। 

বাসে উঠে তো তবু ভিক্ষা করা যায় 

তোমাদের মেট্রোরেলে তো তাও যায় না।     


৪ হাজার ৮২৬ কোটি টাকার ঘর কাকে দিলে? 

কে নিল শেখ হাসিনার উপহার, 

আমরা তো এখনো ফুটপথেই ঘুমাই 

হয়ে চির যাযাবর। 


আমি দরিদ্র ভ্যান চালক

ঘামে ভেজা শার্টে যায় দিন, 

এত খাঁটি দিনরাত 

তবু থাকে ঋণ।  


আমার ঘামের টাকায় যে পদ্মা সেতু 

তাতে ভ্যান চালানো নিষেধ! 

যদি বলো আমার কাছে স্বাধীনতা কি

তবে বলব, বাসায় ফিরে ছেলে মেয়ের মুখের হাসি,

এই হাসি নিয়েই যুদ্ধ করে, আমরা ধুকে ধুকে বাঁচি।       


আমি ইট ভাঙ্গি, কখনো কখনো কাটি মাটি 

তবে শ্রমিক নই, কারণ পহেলা মে তে আমি ছুটি পাই না।  

স্বাধীনতা বুঝি না, তবে ভোট দেই 

ভোটের সময় সিগারেট, পান, গুল পাওয়া যায়। 

তখন আনন্দ লাগে, মনে হয় এটাই তো স্বাধীনতা!


আমি ৫ ই আগস্ট! বাকরুদ্ধ কন্ঠনালী ছিড়ে 

চিৎকার করে জানতে চাই,

ওরে বাদশা নমরুদ, লুটরাজের সর্দার

স্বাধীনতার কথা বলে বলে 

বছরের পর বছর রক্ত নিলে,

কই স্বাধীনতা তো দিলে না? 


তাই আজ হতে গণমানুষের কবিতার এই উদার আহব্বান, 

যেই সংবিধানে ৪২ শতাশং দরিদ্র জনগোষ্ঠির

কোনো অধিকারের কথা লেখা নেই 

সেই সংবিধান পুড়িয়ে ফেলো! 

তোমাদের এই বৈষম্যের স্বাধীনতা আমরা আর চাই না। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)