ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান: বিজয় ধরে রাখতে পরবর্তী করণীয়

লিপির আলো
By -
0
The Student Mass Uprising in Bangladesh What's Next to Sustain Victory

বাংলাদেশের কোনো আন্দোলনে কি এত পুলিশ মারা গেছে। তাহলে এই আন্দোলনে কেন মারা গেল? কারণটা খুব সহজ, আন্দোলন দমনে পুলিশ যতই নিষ্ঠুর আচরণ করেছে, ততই তারা বিক্ষোভকারীদের ক্রোধের কারণ হয়েছে এবং তার পরিণতিতেই দেখা যাচ্ছে পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রোশ এবং প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা। পুলিশের যেসব স্থাপনার ওপর হামলা হয়েছে, সেগুলো সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু এই বিপর্যয় পুলিশ নিজেরাই ডেকে এনেছে। তাদের মৃত্যুর জন্য আজ তারা নিজেরাই দায়ী। 


আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও এখন একই রকম প্রতিশোধমূলক আক্রোশের শিকার হচ্ছেন, যাতে অনেক ক্ষেত্রেই চরম নিষ্ঠুরতার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। এগুলো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং অবশ্যই থামানো প্রয়োজন। ক্ষমতায় থাকার সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের যে নিগৃহীত করেছেন, তা–ও যেমন নিন্দনীয়, তেমনি নিন্দনীয় প্রতিশোধের রাজনীতিও। এসব হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে উদ্যোগী হতে হবে। 


সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর যেসব হামলা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে, তা–ও এক ধরণের ষড়যন্ত্র হতে পারে। এসব রুখতে হবে।


সরকার গঠনের অনিশ্চয়তা যত প্রলম্বিত হবে, প্রশাসনিক স্থবিরতা ততই জনজীবনকে স্থবির করে ফেলবে, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে। রাজনৈতিক নেতাদের তাই উচিত হবে দ্রুত একটি সমঝোতা চূড়ান্ত করা। 


এই সমঝোতা শুধু অন্তর্বর্তী সরকারে কে থাকবেন আর কে থাকবেন না, তা নিয়ে নয়, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং স্বৈরতান্ত্রিক অপশাসনের অন্যায়গুলো অবসানের অগ্রাধিকার নির্ধারণের সক্ষমতাও থাকতে হবে। প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে দলীয় আনুগত্যমুক্ত করা, হত্যাকান্ডের বিচার ও তদন্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং অর্থনৈতিক অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগগুলোর বিচারের বিষয়েও কাজ করতে হবে। 


রাষ্ট্রে যেমন শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে হবে তেমনি রাজনৈতিক দল এবং আমলাতন্ত্রের মেরামত করতে হবে। যেমনঃ   

১. চাঁদাবাজি

২.এলাকা দখল 

৩. সরকারি অফিসে ঘুষের বিনিময়ে কাজ করা 

৪. নিয়োগ বাণিজ্য

৫. ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতি 

৬. প্রসাশনের রাজনৈতিক লেয়াজু 

ইত্যাদি বিষয়গুলো চিরতরে বিলুপ্ত করতে হবে। এবং এক্ষেত্রে জনগণকেই মূখ্য ভূমিকা নিতে হবে। ঝামেলা হবার ভয়ে চুপ করে বসে না থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। সরকারি অফিস আদালত থেকে যেকোনো কাজে কেউ অন্যায় দাবি কিংবা অন্যায় কথা বললে কানের নিচে তাঁতিয়ে থাপ্পড় দিতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি এমন বিপ্লবী হয়ে ওঠে কেবল তখনই সম্ভব এই জাতিকে অন্যায় দূর্নীতির কবল থেকে মুক্ত করা। 


মুহাম্মদ বাবলু 

কবি,লেখক ও সম্পাদক   


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)