বিয়ে একটি সামাজিক রীতি। এই রীতি চলে আসছে বহু প্রাচীন সময় থেকে। এই রীতি উদযাপন নীতি পরিবর্তন হয়েছে যুগে যুগে। সময়ের সাথে যোগ হয়েছে নতুন নতুন ট্রেন্ড। এই ট্রেন্ডের অন্যতম নতুন সংস্করন এক রঙ, এক পোশাক নীতি। এখন প্রায় সব বিয়েতে এ ট্রেন্ডের প্রচলন লক্ষনীয়।
বিয়েতে প্রতিনিয়তই যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন রীতি। তারই এক অন্যতম সংস্করন এক রঙ, এক পোশাক নীতি। এখন প্রায় সব বড় ছোট বিয়েতে একটি কালার ও ড্রেস কোড দিয়ে দেওয়া হয়। বিয়েতে আগত মেহমানরা এ কোড মেইনটেন করে পোশাক পড়ে আসে।। আবার বিয়েতে বর কনে পক্ষে আত্মীয় স্বজনদের জন্যেও থাকে নির্দিষ্ট কালার কোড। এটি বিয়ে বাড়িকে যেমন রঙ্গিন করে তুলে, সেই সাথে সৃষ্টি করে ভোগান্তিরও।
এই ট্রেন্ডের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে শাড়ি পাঞ্জাবি। সাধারনত গরম কালের বিয়েতে এই ট্রেন্ড বেশি প্রচলিত। এক কালার পাঞ্জাবির ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়েছে বর্তমান সময়ের বিয়ে গুলোতে।
বেশির ভাগ সময় এত মানুষের জন্য একবারে এত এক রঙের ড্রেস পাওয়া হয়ে উঠে দুষ্কর। অনেক সময় প্রায় ৬ মাস থেকে ১ বছর আগে পর্যন্ত এসব ড্রেসের প্রি অর্ডার দেওয়া লাগে।
আবার এ ট্রেন্ডকে ঘিরে ব্যবসায়িক মহলে গড়ে উঠেছে এলাহি কান্ড। তারা অনেক সময় সুযোগ বুঝে বিশেষ করে বিয়ের মৌসুমে এসব ড্রেসের দাম বাড়িয়ে দেয়। মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নেয় বাড়তি অর্থ। বিয়ের এই এক কালার শাড়ি পাঞ্জাবি সরবরাহে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ফেসবুক পেজও। এরা পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিয়ের জন্য শাড়ি পাঞ্জাবি সরবরাহ করে থাকে।
একটি বিয়েতে প্রায় ২০০-১০০০ বা তারও বেশি মানুষের আয়োজন করা হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় এত মানুষের একই ড্রেস যোগাড় করা সম্ভব হয় না। আবার অনেকে একই ড্রেস কিনার সামর্থ্য থাকে না। একই রঙ্গের ড্রেস না থাকায় অনেকে এইসব আয়োজনে অংশ নিতেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে তারা থেকে যায় আয়োজনের বাইরে। এতে হারায় উৎসবে সার্বজনীয়তা। অনেকের অনুপস্থিতিতে ফেকাসে হয়ে পড়ে উৎসবের রঙ।
একই ড্রেসের এই ট্রেন্ড বিয়েতে এক অন্য মাত্রা যোগ করলেও, হারিয়ে ফেলছে উৎসবের সার্বজনীয়তা। মানুষের মধ্যে তৈরি করছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভেদ। উৎসবের মাত্রা বৃদ্ধি করার বিভিন্ন উপায় আছে। তাই বলে তা সামাজিক বিভেদ সৃষ্টি করে নয়। সবার অংশগ্রহনের মাধ্যমেই উৎসবের রঙ বৃদ্ধি সম্ভব।
তানজিল ফুয়াদ
সহসম্পাদক,লিপির আলো
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0মন্তব্যসমূহ