দৃশ্য - ১
সময়: সন্ধ্যা
স্থান: চিলেকোঠা
চরিত্র: হিমেল ( নায়ক)
[ক্যামেরায় প্রথমেই দেখানো হবে একটা বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় ছোট একটা রুম। তারপর আস্তে আস্তে রুমের ভিতরটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। সারা রুমময় সিগারেটের সাদা ধোঁয়া উড়তে থাকবে। রুমের একপাশের জানালা দিয়ে প্রবেশ করা জোৎস্নার আলো আর সিগারেটের ধোঁয়ায় এক রহস্যময়ী আলো আঁধারের সৃষ্টি হবে সেখানে। খাটের একপাশে নিচে ফ্লোরে বসে উপরের দিকে তাকিয়ে থাকবে হিমেল। তার হাতে থাকবে জলন্ত একটা সিগারেট। চোখগুলো ভিজা থাকবে তার। বড় বড় চুল, মুখে দাড়ি, চোখের নিচ দিয়ে কালি পড়ে গেছে তার। সে এক হাতে সিগারেট টানবে। আর অন্য হাত দিয়ে মাথার চুল বুলাতে থাকবে। সম্পূর্ণ একটা পাগল বেশ থাকবে তার। ]
হিমেল: দিপা, এই দিপা। ( তাই বলে সে হাসতে থাকবে। কখনো কখনো কাঁদতে থাকবে।)
[ সারা ঘরময় সেই হাসি ও কান্নার আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে।]
[[ প্রথম দৃশ্যর পরই হিমেল এর জীবনের গল্প দেখানো হবে দর্শককে।
দৃশ্য - ২
সময়: সকালবেলা
স্থান: হিমেলের রুম ও দিপার বাড়ির ব্যালকুনি
চরিত্র: হিমেল ( নায়ক) ও দিপা ( নায়িকা)
[ ক্যামেরায় একটি আলো ঝলমলে সকাল দেখা যাবে। ল্যাপটপে চোখ রেখে বিছানায় শুয়ে ফেসবুকিং করতে থাকবে হিমেল। দিপা নীল শাড়ি পড়ে বেলকুনিতে বসে থাকবে। তার হাতে একটা কফির মগ থাকবে। দিপা এবং হিমেল ফেইসবুকিং করতে থাকবে যে যার মতো। ]
হিমেল: ( তার টাইম লাইনে গিয়ে পোস্ট পড়তে থাকবে। এমন সময় একটা কমেন্ট আসবে। কমেন্টটিতে লেখা থাকবে- বাহ্ আপনি তো দারুণ লেখেন! একেবারে এক'শতে জিরো। ভাই এইসব বাদ দিয়ে বাদাম বেচেন গিয়ে। যতসব ফালতু লেখক!!!!!
কমেন্টটি পড়ে বিরক্তির চোখে তাকাবে হিমেল।)
এই, এই মেয়ে কে তুমি? আর এইসব ফালতু কমেন্ট করছো কেন আমার পোস্টে? ( হিমেল মেয়েটির ইনবক্সে গিয়ে লিখবে।)
দিপা: (মেসেজটি সিন করে কোনো রিপ্লাই না দিয়ে কফি খেতে থাকবে।)
হিমেল: আশ্চার্য! এই, তু.. তু... তুমি মেসেজের রিপ্লাই দাও না কেন হ্যা? তো...তো... তোমার এতো বড় সাহস। আমাকে ফালতু বলো। তুই নিজেই তো একটা ফালতু। বেয়াদপ মেয়ে। (দিপার ইনবক্সে আবারও লিখবে হিমেল।)
দিপা: এই যে মি. কে আপনি? আর এই রকম অসভ্য ভাবে তুই তুকারি করছেন কাকে? সমস্যাটা কি আপনার? ( রাগন্বিত মুডে মেসেজের রিপ্লাই দেবে দিপা।)
হিমেল: ও এখন চিনতেছো না, না? অসভ্য ফাজিল মেয়ে একটা। কত বড় সাহস আমাকে কি না বলে অ.. অ.. অসভ্য। ( দিপার মেসেজের রিপ্লাই দেবে হিমেল।)
দিপা: আপনি তো একটা তোতলা। আপনার সাথে আর কি কথা বলবো? তোতলা কোথাকার। ( দিপা মুখ ভেঙচি দিয়ে রিপ্লাই দেবে হিমেলের মেসেজের।)
হিমেল: আমার তোতলামী নিয়ে একদম ক..ক..কথা বলবা না, বলে দিচ্ছি তোমাকে। আমি তোতলা না। রেগে গেলেই কেবল হালকা তো..তো..তোতলা হয়ে যায়। ( দিপার মেসেজের রিপ্লাই দেবে হিমেল।)
দিপা: তাই বলে ফেইসবুকেও তোতলাবেন? হা হা হা হা.........
( মেসেজের রিপ্লাইটি দেওয়ার পরই। ফেসবুক থেকে বেরিয়ে যাবে দিপা।)
হিমেল: ( মেসেজ লিখতে গিয়ে দেখবে দিপা বেরিয়ে গেছে। রাগে তার ঠোঁট কাঁপতে থাকবে।)। শিট্। (তাই বলে বেডের উপর কিল মারবে সে।)
[ হিমেল তারপর রেগে গিয়ে মেয়েটির প্রোফাইলে ঢুকবে মেয়েটিকে ব্লক করে দেওয়ার জন্য। তখনই মেয়েটির একটা মাথায় ফুলের ক্রাউন পড়া ছবি দেখে সে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। তারপর সে মেয়েটির প্রোফাইল থেকে কিছু পোস্ট পড়বে। আর ঠিক তখনই মেয়েটির প্রতি তার একটা ভালো লাগা জন্মে যাবে। তাই সে মেয়েটিকে আর ব্লক করবে না। ল্যাপটপটা রেখে শুয়ে পড়বে সে
দৃশ্য- ৩
সময়: দিনের বেলা
স্থান: হিমেলের রুম
চরিত্র: হিমেল ও হিমেলের ছোট ভাই জন
[ক্যামরায় দেখা যাবে একটা হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে। চোখে সুরমা পড়ে। রুমের মধ্যে পায়চারী করতে থাকবে হিমেল। সে মুখে বার বার একটা কবিতার দুটি লাইনই বলতে থাকবে। এমন সময় জন এসে রুমে ঢুকবে।]
জন: সালাম ভাই। ভাই, ঘটনা তো মাগার একটা ঘটায় ফেলছি। ( তাই বলে সে একটা হাতের আঙুলের মধ্যে পিস্তল ঘুরাতে থাকবে।)
হিমেল: ঘটনা! তোর আবার কিসের ঘটনা? ( জনের কথা শুনে জনের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইবে হিমেল।)
জন: ঘটনা হইলো গিয়া... ( বলতে গিয়েই থেমে যাবে সে। তারপর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে হিমেলের দিকে।) ভাই এইডা আমি কি দেখতাচি! আপ্নে হঠাৎ এই বেশ ধরছেন ক্যান? ভাই আপনি ঠিক আছেন নি? মানে কোনো সমেচ্ছ্যা নাই তো? মহল্লার সগলতে দেইখ্যা ফেলাইলে আমগো মান ইজ্জত থাকবো কিছু কন?
হিমেল: মহল্লা! ঐ আমি কি মহল্লার মানুষরে ডরাই? আর আমারে এই পোষাকে কি খারাপ লাগতাছে ? বোকা,একদম কিচ্ছু বোঝে না। শোন তোরে একটা গল্প কই। ছোট বেলায় আমার খুব শখ ছিল আমি একদিন অনেক বড় কবি হবো। দেশে দেশে আমার নাম ছড়িয়ে যাবে। আয়, এদিকে আয়। তোকে একটা কবিতা শোনায়। ( তাই বলে হিমেল জনের দুই গালে আলতো আলতো করে থাপড়াতে থাকবে। আর কবিতা বলবে- ঐ দেখা যায় তালগাছ, ঐ আমাদের গাঁ........)
জন: ভাই, আপ্নে আমারে যতই মারেন না ক্যান। তয় কইলাম আপ্নের এই বেশ- ভূষাণ কিন্তু মাগার আমার ভ্যালা ঠ্যাকতেছে না। যেই হাতে পিস্তল। ঐ হাতেই আবার কলম! এইডা ক্যামতে সম্ভব।
হিমেল: দুষ্টু, কিচ্ছু বোঝে না। বাদ দে এইসব। চল তোরে একটা মাইয়ার ছবি দেখাই। দেখ তো চিনোছ কি না মাইয়াডারে? ( তাই বলে হিমেল জনের সামনে ল্যাপটপটি নিয়ে এসে দিপার ছবি দেখাবে জনকে।)
জন: হ ভাই, চিনি তো। আমাগো মহল্লাতেই থাকে। নতুন ভাড়াইট্যা। সরকার বাড়ির দোতলায় ভাড়া থাকে। তয় মাইডা কিন্তু বেশি ছুবিধার না। একাই আইছে। লগে কেউ নাই ক্যা। শুনছি মায়াডা নাকি হিন্দু।
হিমেল: জাত গেল, জাত গেল বলে...........( হিমেল জনের দুই টাবু ধরে আদর করতে করতে আনান্দের চোখে, হাসি মুখে গানটি গাইতে থাকবে।) চল।
জন : কোথায় যামু? ভাই আপ্নে এমন করতাছেন ক্যান?
হিমেল: আবে ব্যাটা চল না। এতো ফটর ফটর করস ক্যা? ( তাই বলে হিমেল জনের ঘাড়ে হাত রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যাবে।)
দৃশ্য-৪
সময়: বিকাল বেলা
স্থান: দিপার বাড়ির ব্যালকুনি ও
বাড়ির সামনের রাস্তা
চরিত্র: হিমেল ও জন
[ক্যামরায় দেখা যাবে একটা সুন্দর বাড়ি। বাড়ির সামনের রাস্তায় দুইটা ছেলে ঘুরাঘুরি করছে।]
জন: ভাই, আমি তো কিছুই বুঝতে পারতাছি না। মাগার আপ্নে আমারে এহানে লইয়া আইলেন ক্যান্তে।
হিমেল: চুপ! একদম চুপ। সোজা হইয়া দাড়াই থাকবি এইখানে। ( তাই বলে হিমেল বার বার ব্যালকুনির দিকে তাকাবে। কিন্তু সেখানে দিপাকে দেখতে পাবে না সে।)
জন: ছত্যি কইরা কন তো ভাই, আপ্নের কি হয়চে? এমন উপারের দিকে চাইয়া কি দ্যাখতেছেন বার বার?
হিমেল : ( জনের কোনো কথার জবাব না দিয়ে একই ভাবে দাড়িয়ে থাকবে আরো ১০/১৫ মিনিট। তারপর সে হিমেল এর ঘাড়ে হাত রেখে। হাসতে হাসতে রাস্তা দিয়ে চলে যেতে থাকবে)
জন: ভাই, কিছুই তো বুঝলাম না মাগার। ক্যান আইলেন আর ক্যান্তে যান? ( জন হাটতে হাটতে উৎসুক চোখে জিজ্ঞাসা করবে হিমেলকে।)
হিমেল: অত কিছু না বুঝলেও চলবো তোর। চল। ( তাই বলে জনের গালে আস্তে আস্তে থাপ্পড় মারতে মারতে হেটে যাবে হিমেল।)
দৃশ্য- ৫
সময়: রাত
স্থান: হিমেল ও দিপার রুম
চরিত্র: হিমেল ও দিপা
[ক্যামেরায় দেখা যাবে হিমেল ল্যাপটপে ও দিপা ফোনে ফেইসবুকিং করছে।]
হিমেল: তোমার ব্যালকুনির সামনে আজ বিকালে অনেক্ষণ দাড়িয়েছিলাম। কই তোমাকে তো দেখলাম না? ( দিপার ইনবক্সে লিখবে হিমেল।)
দিপা: কে আপনি? ( রিপ্লাই দেবে দিপা।)
হিমেল: আমি, আমি। মনে নেই? ঐ যে সকাল বেলার সেই তোতলাটা। ( ইনবক্সে লিখবে হিমেল।)
দিপা: কই এখন তো তোতলাচ্ছেন না একটুও? ( হাসতে হাসতে রিপ্লাই দেবে দিপা।)
হিমেল: বলেছিলাম না আমি সত্যিকারের তোতলা না। কেবল রাগলে পারে একটু তোতলাই। ( হেসে হেসে ইনবক্সে লিখবে হিমেল।)
দিপা: ভালো। ( রিপ্লাই দেবে দিপা।)
হিমেল: আমি কিন্তু জানি, তুমি একাই থাকো। ( ইনবক্সে লিখবে হিমেল।)
দিপা: (মেসেজটি সিন করে। বিস্মিত হবে। সে আর কোনো রিপ্লাই না দিয়ে ফেইসবুক থেকে বেরিয়ে আসবে।)
হিমেল: কি হলো? ( দিপার মেসেজের রিপ্লাই না পেয়ে লিখবে।)
[ দিপা আর কোনো রিপ্লাই দেবে না। হিমেল মেসেজের রিপ্লাই না পেয়ে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর। দিপাকে good night লিখে শুয়ে পড়বে বেডে। ]
দৃশ্য- ৬
সময়: সকাল বেলা
স্থান: দিপার বাড়ির গেটের সামনে
চরিত্র: হিমেল, দিপা, জন,
রিক্সাঅলা ও একটি ছেলে।
[ক্যামেরায় দেখা যাবে হিমেল দিপার বাড়ির গেটের সামনে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকবে। তারপর গেট দিয়ে বাড়ির ভিতর থেকে দিপা বের হবে।]
হিমেল: ( গেটের সামনে রাস্তা দিয়ে ঘুরাঘুরি করতে থাকবে সে।)
দিপা: ( গেট থেকে বের হয়ে রিক্সার জন্য দাড়িয়ে থাকবে সে। হিমেলের দিকে একবার তাকিয়ে, দেখেও না দেখার ভান করবে সে।)
[এর মধ্যে একটা রিক্সা চলে আসবে।]
হিমেল: ( দিপাকে কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারবে না। সে কিছুটা দূরে পিছন ঘুরে দাড়িয়ে থাকবে।)
দিপা: এই মামা যাবে? শাহবাগ। ( রিক্সাঅলাকে ডেকে বলবে দিপা। রিক্সাঅলা যেতে রাজি হবে।)
[দিপা রিক্সায় উঠতে যাবে ঠিক এমন সময় গুলির একটা আওয়াজ হবে। হিমেল দৌড়ে এসে দিপাকে সরিয়ে দেবে। একটা ছেলে দৌড়ে পালিয়ে যাবে। আর হিমেল দিপাকে বাঁচানোর সময় জনের সাথে হিমেলের ধাক্কা লাগবে। ফলে জনের প্রথম এবং দ্বিতীয় দুইটি ফায়ারই মিস হবে।]
জন: ( মাথা চুলকাতে চুলকাতে রক্ত চোখে হিমেলের দিকে তাকাবে। পাশে দিপা থাকায় মুখেে কিছু বলতে পারবে না সে।)
হিমেল: ( জনকে চলে যাওয়ার জন্য চোখ দিয়ে ইশারা করবে।)
[ জন বার বার হিমেলের দিকে তাকাতে তাকাতে সেখান থেকে চলে যাবে।]
দিপা: ( হিমেলকে সামান্য ধন্যবাদটুকুও না দিয়ে রিক্সায় উঠে পড়বে। তারপর সে রিক্সাঅলাকে চলে যেতে বলবে।)
[রিক্সাঅলা চলে যাবে। আর সেদিকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চেয়ে থাকবে হিমেল।]
দৃশ্য- ৭
সময়: রাত
স্থান: হিমেল ও দিপার রুম
চরিত্র: হিমেল, দিপা ও জন
[ক্যামেরায় দেখা যাবে হিমেল তার রুমে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে। সিগারেট টানছে। এমন সময় রুমে প্রবেশ করবে জন।]
হিমেল: জন আরে তুই। কখন আসলি। এদিকে আয়, বস এখানে।
জন: ( তার মন ভার হয়ে থাকবে। সে হিমেলের সামনে এসে দাড়াবে।)
ভাই, এইডা কিছু হইলো? একটা ফালতু মাইয়ার জন্য......। ইস রে! একটুর লাইগা মালডা রে ফুটা করতে পারলাম না। এহন বস্ রে যে আমি কি জবাব দিমু।
হিমেল: জন! মুখ সামলে কথা বলবি। ও তোর ভাবি লাগে। তুই এখন এখান থেকে যা। বস্ রে আমি দেখবনে। ভাগ কইতাছি। মাথাটা গরম করিস না একদম। ( তাই বলে পিস্তল নড়াচড়া করতে থাকবে হিমেল।)
জন: ভাই, একটা হিন্দু মাইয়ার লাইগা তুমি শেষ পর্যন্ত। ছিঃ ছিঃ........। আমি বস রে সব কইয়া দিমু কইতাছি খোদার কসম। ( তাই বলে শাসাতে শাসাতে আঙুল নাড়তে নাড়তে চলে যাবে জন।)
[এমন সময় হিমেলের মোবাইলে টুং করে একটা আওয়াজ হবে। তাতে মেসেঞ্জার থেকে আসা দিপার মেসেজ দেখা যাবে।]
দিপা: আমাকে বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনাকে যা ভাবছিলাম। আপনি তার থেকেও অনেক ভালো একটা মানুষ। এই আপনার কোথাও লাগে নি তো? ( দিপার ফোন থেকে আসা মেসেজে লেখা থাকবে।)
হিমেল: না, না, আমার কিছু হয়নি। তুমি ঠিক আছো তো?( হিমেল রিপ্লাই দেবে দিপাকে।)
[হিমেলের মুখে হাসি ফুটে উঠবে।]
[তারপর তাদের মাঝে সকাল, দুপুর, রাত অনেক মেসেজ আদান-প্রদান হবে। যা দর্শক আর শুনতে পাবে না।]
[হিমেল আর দিপার মাঝে অনেক ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যাবে।]
দৃশ্য- ৮
সময়: রাত
স্থান: হিমেল ও দিপার রুম
চরিত্র: হিমেল ও দিপা
[ক্যামেরায় দেখা যাবে হিমেল বেডে বসে ল্যাপটপে দিপার সাথে চ্যাট করবে]
হিমেল: তোমাকে কিছু বলার আছে। চলো দেখা করি। ( দিপার ইনবক্সে লিখবে হিমেল।)
দিপা: আপনাকেও আমার কিছু জানানোর আছে। তবে কোথায় দেখা করবেন বলেন? ( রিপ্লাই দেবে দিপা।)
হিমেল: লেকের ধারে। ( লিখবে হিমেল।)
দিপা: কবে? আর কখন? ( রিপ্লাই দেবে দিপা)
হিমেল: কালকেই হোক তাহলে। বিকাল চারটায়। তুমি ফ্রি আছো তো? ( লিখবে হিমেল)
দিপা: হুম। আচ্ছা ঠিক আছে তাই হবে। ( রিপ্লাই দেবে দিপা)
হিমেল: তুমি কিন্তু নীল শাড়ি পড়ে আসবে। ( লিখবে হিমেল)
দিপা: আর আপনি হলুদ পাঞ্জাবী। (রিপ্লাই দেবে দিপা)
হিমেল: কপালে কালো টিপ পড়বে। ( লিখবে হিমেল)
দিপা: পাগল.....! ( তাই বলে হাসি দিয়ে ফেইসবুক থেকে বের হয়ে যাবে সে।)
দৃশ্য- ৯
সময়: বিকাল বেলা
স্থান: লেকের ধার
চরিত্র: হিমেল, দিপা, জন,
আরো তিনজন ছেলে
[ক্যামেরায় দেখা যাবে দিপা নীল শাড়ি পড়ে লেকের সামনে দাড়িয়ে আছে। বাতাসে তার কানের পাশের চুলগুলো উড়তে থাকবে। কিছুক্ষণ পরে হিমেল আসবে। তার গায়ে হলুদ পাঞ্জাবি থাকবে।]
হিমেল: sorry. লেট করে ফেললাম তাই না? ( তাই বলে তার দুই কানে হাত দেবে সে।)
দিপা: হয়ছে আর ঢং করতে হবে না আপনাকে। ( তাই বলে হিমেলেরর হাত দুটো সরিয়ে দেবে তার কান থেকে)
হিমেল: ( তখন পকেট থেকে একটা ইয়োলো রোজ বের করে ধরবে দিপার সামনে)
এই নাও তোমার পছন্দের গোলাপ।
দিপা: ধন্যবাদ। ( একটা হাসি দেবে হিমেলের কাছ থেকে গোলাপটি নিয়ে)
হিমেল: গন্ধটা ভালো না? একেবারে তাজা। আমি আসার পথেই কিনেছি তোমার জন্য।
দিপা: ভালো। তবে গন্ধ নেই।
হিমেল: (একটা নির্বুদ্ধিতার হাসি দেবে)। গন্ধটা.....যাইহোক। তুমি যেন কি একটা বলতে চেয়েছিলে বলো।
দিপা: না, আপনিও তো কি বলবেন একটা বলে ডেকেছেন। আপনারটাই শুনি আগে। আমি না হয় তারপরেই বলবো।
হিমেল: না, তুমিই আগে বলো।
দিপা: না, আপনি ডেকেছেন। আপনিই আগে বলবেন।
হিমেল: (ইইস্তত করতে থাকবে। ইস্তত করতে করতে হঠাৎ দিপার একটা হাত চেপে ধরবে।)
দিপা আসলে আমি তোমাকে ভালোবাসি। ঠিক প্রথম যেদিন ফেইসবুকে তোমাকে দেখেছিলাম। সেইদিন থেকে। ( এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে, দিপার হাতটি শক্ত করে ধরে রাখবে হিমেল।)
দিপা: ( তার সমস্ত মুখ শুকিয়ে যাবে। সমস্ত হাসি হারিয়ে যাবে। সে এক দৃষ্টিতে হিমেলের দিকে তাকিয়ে থাকবে। মুখে কোনো শব্দ করবে না)
হিমেল: দিপা প্লিজ চুপ করে থেকো না। একটা কিছু বলো।
দিপা: (তখনো চুপ করে দাড়িয়ে থাকবে)।
হিমেল: (দিপার হাত ছেড়ে দিয়ে দুই পা পিছতে পিছতে বলবে)। কি আমি মুসলিম বলে তুমি আমাকে ভালোবাসবে না? আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ তাই না? ও আমি তো ভুলেই গেছিলাম, কারো ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার আমার নেই। আমি তো মানুষ না।
[তখনই বলে উঠবে দিপা ]
দিপা: আমি ম্যারিড। ( কথাটি প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে।)
[সাথে সাথে বিদুৎ চমকে উঠবে যেন হিমেলের বুকের ভিতরে। হিমেল দিপার দুই হাত চেপে ধরে বলবে ]
হিমেল: না, তুমি মিথ্যে বলছো। এটা হতে পারে না। ( তাই বলে দিপার হাতে ঝাঁকি দিতে থাকবে হিমেল)
দিপা: হ্যা, এটাই সত্যি। আমার হ্যাজবেন্ড কানাডায় থাকে। আর এটা বলতেই আমি এখানে এসেছিলাম আজ। ( তাই বলে সে তার হাত ঝাঁড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নিবে। এরপর ঘাড় ঘুরিয়ে চলে যেতে থাকবে সে।)
হিমেল: ( দিপা চলে যেতে থাকবে। আর অহসয়ের মতো তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকবে সে।)
[তখনই একটা গুলির আওয়াজ শোনা যাবে। দিপা ঢলে পড়বে লেকের ধারের রাস্তায়। হিমেল দৌড়ে গিয়ে দিপাকে কোলে তুলে নেবে। এক ভয়বহ ব্যাথার ছাপ ফুটে উঠবে তার মুখে। হিমেল পিছন ফিরে দেখবে জন ও আরো তিনজন। জনের হাতে পিস্তল। সেই গুলিটি চালিয়েছে। হিমেল দিপার মুখের দিখে তাকিয়ে উঠতে গিয়েও, উঠে দাড়াবে না। জন দূর থেকে বলবে ]
জন: (দুই হাত জোর করে )। ভাই মাফ কইরা দিয়েন। বসের হুকুম।
(তাই বলে সে তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে সেখান থেকে চলে যাবে)
[চারিদিকে সব কিছু ধূসর হয়ে আসবে। হিমেল দিপাকে কোলে নিয়ে। দিপা, এই দিপা, দিপা চোখ খোলো। তাই বলে চিৎকার করতে থাকবে। আস্তে আস্তে রাত নেমে আসবে। কেবলই হিমেলের বুকফাটা চিৎকারেরর আওয়াজ ভেসে আসবে বাতাসে।]
সমাপ্ত
গল্পে নতুনত্ব আনা যেত না
উত্তরমুছুনসুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ
মুছুন